, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশি ড.সাবরিন ফারুকি

  • আপলোড সময় : ২৭-০১-২০২৪ ০৩:০৮:৪৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০১-২০২৪ ০৩:০৮:৪৬ অপরাহ্ন
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশি ড.সাবরিন ফারুকি সংগৃহীত
বহুসাংস্কৃতিক অস্ট্রেলিয়ান সমাজে অবদান রাখায় এ বছর অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া জেনারেল ডিভিশনে মেডাল অব দ্য অর্ডার (OAM) অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন সিডনির ড. সাবরিন ফারুকী। প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নারী হিসেবে তিনি এই পুরস্কার পান। 

অস্ট্রেলিয়া ডে উপলক্ষে এ বছর বিভিন্ন ক্যাটাগোরিতে অনার এবং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১০৪২ জন অস্ট্রেলিয়ান। সাবরিন ফারুকীর আগে মাত্র পাঁচজন বাংলাভাষী এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। 

মূলত তিনটি ক্যাটাগোরিতে এসব অনার ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এগুলো হলো, অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া অনার্স (জেনারেল অ্যান্ড মিলিটারি ডিভিশন্স); মেরিটোরিয়াস অ্যাওয়ার্ডস; এবং ডিস্টিংগুইশড অ্যান্ড কন্সপিকিউয়াস অ্যাওয়ার্ডস (মিলিটারি)।

অস্ট্রেলিয়া ডে ২০২৪ অনার্স লিস্টে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া জেনারেল ডিভিশন-এ সর্বমোট ৭৩৯ জন স্থান পেয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন পেয়েছেন কোম্পানিয়ন অব দ্য অর্ডার, ৩৮ জন পেয়েছেন অফিসার অব দ্য অর্ডার, ১৯৪ জন পেয়েছেন মেম্বার অব দ্য অর্ডার এবং ৫০৩ জন পেয়েছেন মেডাল অব দ্য অর্ডার।

৩৭৩ জন নারী এবার এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন, যা জেনারেল ডিভিশনে স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের অর্ধেকেরও বেশি (৫০.৫%)। ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ান অনার্স সিস্টেম চালু হওয়ার পরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার জেনারেল ডিভিশনে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি স্বীকৃতি পেল।

তালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সীর বয়স ৩২ বছর এবং সবচেয়ে বেশি ১০০ বছর বয়সী ব্যক্তি রয়েছেন।

ড. সাবরিন ফারুকী বলেন, ‘জীবনে আসলে দুই-তিনবার আমি এখানে রেসিস্ট ওয়ার্ডের ভিক্টিম হয়েছি। বাট আমার কর্মক্ষেত্রে কখনোই প্রভাব পড়েনি। বরং, মানুষ আমাকে খুবই সম্মান করেছে।’

এ বছর মেডাল অব অর্ডার (OAM) পেয়েছেন লেবার পার্টি থেকে সিডনির কাম্বারল্যান্ড সিটি কাউন্সিলের নির্বাচিত কাউন্সিলর ড. সাবরিন ফারুকী। এই স্বীকৃতি পেয়ে খুব সম্মানিত বোধ করছেন বলে জানান তিনি। 

সাবরিন ফারুকীর জন্ম ঢাকায়। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন তিনি। 

অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দ্বিতীয়বার মাস্টার্স ও পিএইচডি করার পর শিক্ষকতা ও সরকারি চাকুরির পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজেও জড়িয়েছেন ফারুকী।

ফেয়ারওয়ার্ক কমিশন এবং অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অব স্টাটিক্সে কাজ করার পর গত দু’বছর ধরে ফেয়ারওয়ার্ক অমবাডসম্যান হিসেবে কাজ করছেন। স্বেচ্ছাসেবার অংশ হিসেবে তিনি এখন একটি অলাভজনক দাতব্য প্রতিষ্ঠান কালচারাল ডাইভার্সিটি নেটওয়ার্ক ইনকর্পোরেটেড (CDNI) পরিচালনা করছেন।

তাকে সবসময় পর্দা করতে দেখা যায়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি এত সুন্দর একটি দেশে আছি, অস্ট্রেলিয়াতে, যেখানে আমার এই পর্দা কখনও কোনো প্রভাব ফেলেনি আমার কাজে। কোনো নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটা বলবো না যে, কোথাও রেসিজম নেই। জীবনে আসলে দুই-তিনবার আমি এখানে রেসিস্ট ওয়ার্ডের ভিক্টিম হয়েছি। বাট আমার কর্মক্ষেত্রে কখনোই প্রভাব পড়েনি। বরং, মানুষ আমাকে খুবই সম্মান করেছে।’

নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে ড. ফারুকী বলেন, ‘আমি চাই যে, ছেলে-মেয়ে সবারই আসলে ফাইনান্সিয়ালি ইনডিপেন্ডেন্টস দরকার। এটা আমার বিশ্বাস এবং আমি পার্টিকুলারলি বিশ্বাস করি যে, মহিলাদের ফাইনান্সিয়াল ইনডিপেন্ডেন্টস খুবই দরকার এদেশে, যারা মাইগ্রান্টস।’

তিনি তাদের কর্ম-সংস্থানের ক্ষেত্রেও সহায়তা করছেন বলে জানান।